ভুতের গল্প সত্য ঘটনা, ভয়ংকর ভুতের গল্প পড়ুন।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
আজকের ভুতের গল্পটি খুলনা তথা দক্ষিন অঞ্চলের এক ভাইয়ের সাথে ঘটা ভুতের গল্প সত্য ঘটনা । ঘটনাটি ২০১২ সালে শেষের দিকে ঘটে যাওয়া একটি অবাস্তব ঘটনা। আপনাদের বোঝানোর জন্য ভুতের গল্প সত্য ঘটনা টি সহজ ভাবে উপস্থাপন করছি।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
আমি সারওয়ার হোসেন। আমি তখন বিবিএ ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট ছিলাম। ভার্সিটির জন্য ঢাকায় থাকতে হতো। ভার্সিটির সেমিস্টার ফাইনাল শেষে মোটামুটি লম্বা ছুটি থাকায় খুলনায় নিজের বাড়িতে না যেয়ে অন্য কোথাও ছুটি কাটানোর ইচ্ছে করলাম। কারণ কয়েকদিন আগেই খুলনা থেকে ঘুরে এসেছি তাই অন্য কোথাও যাওয়ার ইচ্ছে করলাম।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
যেই ভাবা সেই কাজ, সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাল্য কালের ফেন্ড দীপ্তর বাসা বরিশাল থেকে ঘুরে আসবো। বলে রাখা ভালো একসময় আমি আর দীপ্ত বরিশাল জিলা স্কুলে পড়তাম। যথারীতি হাজির হলাম দীপ্তর বাসায়। বন্ধুর বাসায় যাওয়ার দুদিন পরেই কোন এক ইমারজেন্সি কাজে দীপ্তকে খুলনায় যেতে হয়। যেহেতু আমি ঠিক করেছিলাম খুলনায় যাবো না তাই আমি দীপ্তর বাসায় রয়ে গেলাম। দীপ্ত ঘুরার জন্য বার বার খুলনা ডাকতে থাকে আমায়।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
ঘটনার দিন রাতে ঘড়িতে তখন ১০টা বেজে ৩০ মিনিট ছুই ছুই করে। আমি তখন ডিনার করে বাইরে সিগারেট ধরিয়ে হাটছিলাম। ঠিক তখনই দীপ্তর ফোন আসে। আমি জানতে পারি, যে কাজের জন্য দীপ্তকে খুলনা যেতে হয়েছে সেই কাজের জন্য আমাকেও আজকে রাতেই খুলনা যেতে হবে। ততক্ষণে রাত ১১ঃ০০ টা বেজে গেছে তখন খুলনা যাওয়ার কোন যাএীবাহি বাস,মাইক্রো কিছুই পাওয়া যাবে নাহ।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
একমাত্র উপায় ছিল বাইক। ঘরের ভিতরে একটি বাইক ছিল যা দীপ্তর। অনেক দূরের journey হওয়ায় দীপ্ত বাইক নিয়ে যায় নি। ঘরের ভিতরে তেল পেলাম অতঃপর বাইকে তেল ভরিয়ে ready হয়ে বের হতে হতে ঘড়িতে তখন পনে ১২ টা বাজে দেখতে পেলাম। এই রাতের বেলা শীতের মধ্যে বাইক নিয়ে এতো দূরে journey করতে হবে তাই সিদ্ধান্ত নিলাম হাইওয়েতে ওঠার আগে বাইকটা গ্রেরেজ থেকে একটু অর্থাৎ ওয়াকশপ থেকে একটু চেক করে নিব। ওয়াকশপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে চকবাজার ঘুরে লঞ্চঘাট টার্মিনাল পর্যন্ত যেয়ে ওইখানের একটি গ্রেরেজ থেকে বাইকের টুকিটাকি কাজ করিয়ে নিয়ে হাইওয়ে রাস্তায় টান দিলাম।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
আমিও বরিশালের ছেলে। বরিশালের সব কিছুই আমি জানি ৷ এমনকি আমার দেশের বাড়ি বরিশাল তবে পরিবার খুলনাতে থাকে তাই সেই কারণে আমরাও খুলনাতে থাকি। বরিশাল টু খুলনা হাইওয়ের ভিতরে বরিশালের কালিজিরা ব্রীজ এরিয়া থেকে শুরু করে বেকুটিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত এই রুটে একটু ভয় আছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই রুটে প্রচুর পরিমাণে বাইক ছিনতাই হয়। বরিশালের যারা আছেন তারা সবাই জানেন এই ব্যাপারটা। হাইওয়েতে বাইক টানছি ১০০ উপরে এবং ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্কুল ক্রস করব এমন সময় রাস্তার ভিতরে সাদা কাপড় পরুয়া এক লোক লিফট চাওয়ার ভঙ্গিতে হঠাৎ করেই চোখের পলকে রাস্তার ভিতরে চলে এলো। আমি বাইকের হার্ট বেইক করলাম কিন্তু এই স্পিড বাইক অন দ্যা স্পট বেইক করা ইমপসিবল। স্বাভাবিক ভাবেই আমার বাইক স্লিপ করে কিছুটা সামনের দিকে বেইক করল। অদ্ভুত বিষয়, ওইখানে এক্সিডেন্ট হওয়ার কথা থাকলেও মনে হলো আমি ওই লোকটার শরীর ভেদ করে চলে গিয়েছি। সাথে সাথে এদিক ওদিক ঘাড় ঘুরিয়ে রাস্তায় দেখি কেও নেই কি হলো কিছুই বুঝলাম না।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
ভাবলাম কুয়াশার ভিতরে ভুল দেখছি তাই আবার বাইক টান দিলাম। রূপা তলি যখন ক্রস করছি তখন রাত সাড়ে ১২ টা ওভার হয়ে গেছে। রূপা তলি ক্রস করার সময় বার বার বাইক ছিনতাইকারীদের ব্যাপারটা মাথায় ঘুর ঘুর করছিল কিন্তু কিছুই করার নেই যেকোন মূল্যেই খুলনায় যেতেই হবে। যাইহোক তাই মাথা থেকে সব চিন্তা সরিয়ে বাইক টান দিলাম। আমি এমনিতে প্রচুর রাফ বাইক চালাই। Anyway কিছুক্ষণের মধ্যে কালিজিরা ব্রীজ ক্রস করি তখন অব্দি সব কিছুই ঠিক ছিল। কালিজিরা ব্রীজ ক্রস করার ৭ থেকে ৮ মিনিট পরেই একটা মাইক্রোবাস আমাকে ওভারটেক করল। মাইক্রোটা আমাকে ওভারটেক করে চলে যাওয়ার সময় বেশ অবাক লাগছিল। Because তখন আমার বাইকের স্পিড ছিল ১১০ থেকে ১১৫ এতো স্পিডে থাকার পরেও মাইক্রোটা আমাকে ওভারটেক করল । ভাবলাম যে এই কুয়াশার ভিতরে এতো জোরে মাইক্রো চালানোর দরকার কি! যাইহোক তখনও ভয় পাওয়ার মতো কিছু ঘটেছিল না। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আমার বাইকের পিছনে আর একটা মাইক্রো দেখতে পেলাম। পিছনের যে মাইক্রোটা সেটা আমাকে ওভারটেক করছে না। আমি বাইক স্লো করলেই ওরাও মাইক্রো স্লো করে। আমি বাইক টান দিলেই ওরাও মাইক্রো টান দেয় এমন এক অবস্থা।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
সাত-পাঁচ ভেবে আমি বাইক স্পিডে টান দিলাম। কিছু দূর যাওয়ার পরেই কিছুক্ষণ আগে আমাকে ওভারটেক করে চলে আসা মাইক্রোবাসটা দেখতে পেলাম। ওই মাইক্রোবাসটা রাস্তার মধ্যে এলোমেলো ভাবে অর্থাৎ একবার রাস্তার ডান দিকে একবার বাম দিকে এমন ভাবে ড্রাইভ করছে যেন কোন একটা কারণে, আমি যেন কোনো ভাবেই ওভারটেক করতে না পারি। পিছনে এই মাইক্রোটাও ছিল অর্থাৎ মাইক্রো ড্রাইভারদের ভিতরে একটা কানেকশন রয়েছে। আমি দুই মাইক্রোর মাঝখানে। আমাকে ফেলে যে আমার বাইকটা ছিনতাই করতে চাচ্ছে সেটা বুঝে গিয়েছি আমি। স্বাভাবিক ভাবেই তখন আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না। যত ভালোই বাইক হোক না কেন টিপটপ কন্ডিশনে নেওয়া মাইক্রোর সাথে টক্কর দেওয়া ইম্পসিবল।ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
এইভাবে কিছুক্ষণ চলার পর অর্থাৎ করেই সামনের মাইক্রোটা ইউ টান নিয়ে গাড়িটা ঘুরাতে গিয়েছে। তার উদ্দেশ্যে রাস্তা আটকিয়ে আমাকে ডরবে কিন্তু আমি সামনের মাইক্রোটার কাছাকাছি ছিলাম। যখনি মাইক্রোটা ইউ টান নিয়েছে সাথে সাথেই আমি তাদের মাইক্রোর পিছন সাইট দিয়ে বাইকটা টেনে বের করে নিয়ে চলে গেছি। কোনরকমে মাইক্রোটাকে ওভারটেক করে উন্মাদের মতো বাইক টানা শুরু করেছি। কুয়াশার জন্য সামনে ভালো করে দেখাও যাচ্ছে না তবুও কিভাবে এরকম বাইক টানছিলাম জানি না। বাইকের লুকিং গ্লাসে দেখলাম ওরাও আমার পিছন পিছন ছুটছে। তখন বিভিন্ন ধরনের চিন্তা কাজ করছিল যেমন ওদের হাতে ধরা পড়লে ওরা আমার সাথে কি করবে! কুয়াশার জন্য সামনে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এই স্পিডে সামনে কিছু চলে আসে তাহলে আমার কি করার থাকবে।বাইকের স্পিড তখন ১৩০ ছুই ছুই। আমি এই স্পিডে কোন কিছুর সাথে ধাক্কা খেলে বেঁচে থাকব কিনা কিংবা এই স্পিডে যদি টায়ার পাংচার হয়ে যায় ওই অবস্থায় বাইক কন্ট্রোল করা সম্ভব হবে কিনা এইসব।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
এরকম বিভিন্ন চিন্তা করতে করতে কখন যে খুলনার কাটাখালি গোল চত্বরে চলে এসেছি জানি না। চোখের সামনে হঠাৎ করেই কাটাখালি গোল চত্বর দেখতে পেয়ে বিষ্ময়ের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। Anyway কাটাখালি পাম্পে ধারিয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম,সিগারেট টানলাম। ফিরে আসার সময় হঠাৎ করেই পাম্পের ঘড়ির দিকে নজর গেল আমার এবং দেখতে পেলাম মাএ ১২টা ৪৩ বাজে। মাএ ১৩ মিনিটে বরিশাল থেকে খুলনা আসা সম্ভব নাকি! ভাবলাম ঘড়ি হয়তো নষ্ট। নিজের হাতে ঘড়ি দেখলাম সেখানেও ১২ টা ৪৩ বাজে। বিদ্যুৎ গতিতে পকেট থেকে সেল ফোনটা বের করলাম সেখানেও ১২টা ৪৩ বাজে। তাজ্জব বিষয় এটা কিভাবে সম্ভব! আমার সাথে কি হচ্ছে আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
সর্বশেষ ব্যাপারটাকে ওভার লুক করে রওনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাইকে উঠে চাবি দিলাম। বাইকের স্পিড মিটারের ডিসপ্লেতে দেখলাম সেখানে ২১৬৬ কিলোমিটার শো করছে। এখন আমার ভিতরে ভন ভন করতে শুরু করল বরিশাল থেকে গাড়িতে তেল ভরার সময় ২১৪৮ কিলোমিটার দেখেছি। এইবার একে একে আমার সব কিছু ঘুলাতে হয়ে যাচ্ছে। গাড়িতে তেল ভরার সময় ২১৪৮ কি.মি ছিল এখন ২১৬৬ কি.মি তার মানে আমি মাএ ১৭ কিলোমিটার চালিয়েছি। বরিশাল থেকে খুলনার দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। আমার বাসা থেকে কালিজিরা ব্রীজ পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার। বাইকের মিটার অনুযায়ী আমার বাইক ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত চলেছে তার মানে। আমি কি আকাশ পথে উঠে এলাম! এমন না যে আমার বাইকের স্পিড মিটার নষ্ট Because বার বারি বাইক কত কিলোমিটারে চলছে সেটা শো করছিল।
ভুতের গল্প সত্য ঘটনা-১
কালিজিরা ব্রীজ থেকে কাটাখালি মোড় পর্যন্ত কমপক্ষ হলেও ৫০-৬০ টি স্পিড বেকার আছে কিন্তু আমার বাইক চালিয়ে আসার সময় একটা স্পিড বেকারও আমি ক্রস করিনি। এতো লং journey মাঝে আমি একবারও বাইক বেইক করিনি কারণ আমি যেই স্পিডে বাইক চালিয়ে এসেছি ওই অবস্থাতে বাইক বেইক করলে নির্ঘাত বাইক জাম্প করত বা এক্সিডেন্ট করতাম। তাহলে এতে গুলো স্পিড বেকার গেল কোথায়। বরিশাল থেকে ঝালকাঠি, ঝালকাঠি গাবখান ব্রীজ হয়ে খুলনা আসতে হলে অবশ্যই বেকুটিয়া ফেরিঘাট ক্রস করতে হবে। অর্থাৎ ফেরিতে চড়তে হবে কিন্তু অদ্ভুত বিষয় আমি ফেরিতেই উঠিনি। কিন্তু বেকুটিয়া ফেরিঘাট ক্রস না করে খুলনায় আসার কোন অপশন নেই তাহলে কিভাবে এলাম! এই ব্যাখা কেও যদি যানেন তাহলে জানাবেন। এইটাই
ছিল ঘটনা এতোক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
এই ছিল এক ভাইয়ের সাথে ঘটা ভুতের গল্প সত্য ঘটনা। ঘটনাটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। এরকম নতুন নতুন ভুতের গল্প সত্য ঘটনা জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
ভুতের গল্প পড়ুনঃ-
বাস ড্রাইভারের ভয়ংকর ভুতের গল্প সত্য ঘটনা |২০২২|
মাদ্রাসা ছাত্রের ভয়ংকর ভুতের গল্প সত্য ঘটনা |২০২২|
ভুতের গল্পের ওয়েবসাইটঃ- Bhoot club